পাঠক! শিরোনাম দেখেই ভয় পেয়ে গেলেন? না, ভয় পেলে চলবে না।
আসুন, এস কে সিনহার মুখ থেকেই শুনি…
বিতর্কিত সাবেক প্রধান বিচারক এস কে সিনহা নিজেই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যে তিনি রাজাকার যুদ্ধাপরাধীদেরা সংগঠন ‘শান্তি কমিটি’র একজন সদস্য ছিলো!!!
সিনহা ১০ই সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে নিজের এক বক্তব্যে তখন বলেছে, “মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি নিজেও শান্তি কমিটির সদস্য ছিলাম!”
তাছাড়াও তার সম্পর্কে আরো অভিযোগ আছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সংখ্যালঘুদের ভেতর বেশ কয়েকটি স্বাধীনতার বিপক্ষে সক্রিয় ছিলো। এদের মধ্যে উপজাতি চাকমা নেতা ত্রিদিব রায় তার অন্যতম। সিনহার বাড়ি ভারত সীমান্তবর্তী সে চাইলে সহজে ভারতে যেতে পারতো। তা না গিয়ে সে রাজাকার শিরোমণি গো. আযমের সৃষ্ট শান্তি কমিটিতে যোগ দেয়। তাছাড়া সে সময়ে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ, মণিপুর লিবারেশন আর্মি, ইউনাইটেড লিবারেশন আর্মি অব অসম (আলফা), ত্রিপুরা টাইগার এদের আন্দোলনেও সমর্থন ছিল বাংলাদেশের সংখ্যালঘু উপজাতি ও হিন্দুগোষ্ঠীর অনেকের। এসকে সিনহা ছিলো তাদের অন্যতম। দেশের বাইরে থেকেও এ সকল দেশবিরোধী রাজাকারগুলো দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করা থেকে বিরত থাকবে না।
সিনহার রাজাকারগিরি সম্পর্কে দেশের মন্ত্রী-এমপি আমলা সকলেই জানে। তারপরও কেন তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে না?
গত ২২ আগস্ট ২০১৭ তারিখে আ’লীগের প্রকাশ ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ নিজেও হিন্দু রাজাকার এস কে সিনহাকে উদ্দেশ্য করে বলেছে, সিনহা আদালতে মামলা চলাকালীন নিজের মুখে স্বীকার করেছে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তার জন্য রাজাকার আলবদরদের সহায়ক শক্তি হিসেবে গ্রামে গ্রামে যে শান্তি কমিটি গঠন করা হয়েছিল সেই শান্তি কমিটির সদস্য ছিলো। এটি সে নিজে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। এ পরিচয় সিনহা বিচার বিভাগে প্রবেশের আগ পর্যন্ত গোপন রেখেছিলো।
এছাড়াও ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে দেশীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গোপন নেটওয়ার্কে সেও আছে বলে সিনহার নামে অভিযোগ আছে। বিদেশে বসেও যে, সে এসব বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে যোগাযোগ রাখছে না সেটার নিশ্চয়তা আছে কি?
কুখ্যাত রাজাকার ও স্বাধীনতাবিরোধী এই এসকে সিনহা দেশের বাইরে থেকেই দেশবিরোধী চক্রান্তকারীদের সাথে হাত মেলানোর সমূহ সম্ভাবনা আছে।
এসকে সিনহার রাজাকারগিরি সম্পর্কে মুখ খুলেছেন খোদ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক নিজেও। ২১ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে তিনি বলেছেন, সাবেক প্রধান বিচারক এসকে সিনহা পিস কমিটির সদস্য ছিলো। তাই সে বঙ্গবন্ধুকে একক নেতা মানতে রাজি নয়।
স্বয়ং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী নিজেই যখন এসকে সিনহার রাজাকারগিরি সম্পর্কে অবহিত তাহলে তার বিচারের যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না কেন?
সিনহা প্রধান বিচারক থাকা অবস্থায় রাজাকারদের বিচারেও সে নানারকম ছলচাতুরি করেছে, তাদের থেকে টাকাও খেয়েছে সেটাও এখন ফাঁস হয়েছে। বুঝাই যাচ্ছে সিনহা তার রাজাকারগিরি এখনো ছাড়েনি। বরং দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে আরো পোক্ত ভূমিকায় সে নেমেছে। উপজাতি পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে গোপন সংযোগের বিষয়ে তার সম্পর্কে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ৯ আগস্ট ২০১৭ সরকারের আরেক মন্ত্রী গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এস কে সিনহাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সিনহা যা ভাবছে এবং মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তির সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে যা বলছে তা ঠিক নয়। বাংলার মানুষ জানে- সিনহা শান্তি কমিটির সদস্য ছিলো।
আ’লীগের প্রকাশ ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এদিকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এরা সকলেই প্রকাশ্যে এসকে সিনহা যে একটি রাজাকার ও স্বাধীনতাবিরোধী সেটি প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। এরপরও কি অজানা কারনে এসকে সিনহাকে দেশের মাটিতে বিচারের কাঠগড়ায় না দাঁড় করিয়ে দেশের বাইরে ঘুরতে দেয়া হচ্ছে? এটা কি হতে পারে না যে- এই রাজাকার, দেশদ্রোহী দেশের স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি বিদেশে গিয়েও বিদেশী শত্রুদের হাত করে, তাদের সাথে হাত মিলিয়ে যে কোন সময় দেশের বড় ধরণের কোন ক্ষতি করার চেষ্টা করবে না?
উল্লেখ্য, সাবেক প্রধান বিচারক এস কে সিনহা ৭১’র মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া জামাত নেত মীর কাসেম আলীর ভাইয়ের কাছ থেকে বড় অংকের টাকা পেয়েছে!
এমন অভিযোগ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।
এ সম্পর্কে জয়ের বক্তব্য- নিন্দিত সাবেক প্রধান বিচারক সিনহা সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক এসেছিলো। সেখানে সে গোপনে যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেমের ভাই মামুনের সাথে দেখা করে। আমরা জানতে পেরেছি মামুনের কাছ থেকে সে বড় অংকের টাকা পেয়েছে। টাকাটা তাকে দেয়া হয়েছে আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য। তাদের এই আলাপ দেখেছে ও শুনেছে এরকম সাক্ষীও আছে।
বলাবাহুল্য, এসকে সিনহা যে আগাগোড়া দেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী, বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজাকার সেটা এখন ওপেন সিক্রেট। বিদেশে গিয়েও যে সে এখন দেশের বিরুদ্ধে ফন্দি আঁটছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
তাই বড় ধরণের কিছু ঘটার আগেই সিনহাকে কাঠগড়ায় হাজির করে সর্বোচ্চ সাজার ব্যবস্থা গ্রহণ করার কোন বিকল্প নেই।
অতএব, এটাই স্পষ্ট সিনহা যেখানেই থাকুক যে দেশেই থাকুক সে এ দেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে তথা দেশবিরোধী চক্রের সাথে হাত মেলাবেই। তাই দেশের স্বার্থে অতি জরুরীভিত্তিতে তাকে দেশে এনে দেশদ্রোহী আসামী হিসেবে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
দেশের সার্বিক নিরপত্তার কথা বিবেচনা করে এই কুলাঙ্গার রাজাকার হিন্দু এসকে সিনহাকে দেশে এনে শক্ত বিচারের আওতায় আনার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা সরকারের জন্য খুবই জরুরী।